শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে সেতুতে রডের জায়গায় বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ: সত্যতা পায়নি তদন্ত দল

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে সেতুতে রডের জায়গায় বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ: সত্যতা পায়নি তদন্ত দল

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রিপোর্টার (সুনামগঞ্জ): দক্ষিণ সুনামগঞ্জের গ্রামীণ সড়কের একটি সেতুর সব জায়গায় রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তবে অভিযোগের কোনও সত্যতা পায়নি তিন সদস্যের তদন্ত দল। যতটুকু বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে তার কারণে সেতুর কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন তারা।
তদন্ত দলের সদস্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আরসিসি কাস্টিংয়ের ভেতরে কোনও বাঁশ পাওয়া যায়নি। সেতুর মূল স্ট্রাক্টচারেও কোনও বাঁশ পাওয়া যায়নি। সেতুর ভার্টিকাল ওয়ালে পানি নিষ্কাশনের জন্য ছিদ্র রাখার জন্য পাইপ ও বাঁশের টুকরা দেওয়া হয়েছিল। তা না হলে  সেতুতে পানি জমে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তবে বন্যার পানি এসে যাওয়ায় এগুলো সরাতে পারেনি ঠিকাদার। তাই দূর থেকে দেখে লোকজন মনে করেছে সেতুতে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. এমরান হোসেনের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ রবিবার বিকালে সেতুটি পরিদর্শন করেন।
সেতুর যে জায়গাগুলো নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়, সেসব অংশ হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। এ সময় তারা সেতুর গুরুত্বপূর্ণ অংশে কোনও বাঁশ পাওয়া যায়নি বলে জানান। শুধু সেতুর উপরিভাগে ও অ্যাপ্রোচে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য ছিদ্র তৈরি করতে প্লাস্টিকের পাইপ ও দুটো বাঁশের টুকরা শনাক্ত করেন। এতে সেতুর  কোনও ক্ষতি হয়নি বলে মন্তব্য করেন তারা।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার পূর্ববীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও-হাসকুঁড়ি গ্রামের রাস্তায় ২৭ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি সেতুর অ্যাপ্রোচে দুটো বাঁশের টুকরো দেখা গেলে এলাকাবাসী সন্দেহ করেন পুরো সেতুই বাঁশ দিয়ে তৈরি করেছে ঠিকাদার। এর কারণে বিষয়টি তদন্ত করতে যায় তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল।
সেতু নির্মাণকারী  প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাহিদ মিয়া বলেন, ‘সেতুতে একটাও বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি। কাজ করার সময় বন্যার পানি চলে আসায় শাটারের সঙ্গে বাঁশের টুকরা দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই বাঁশের টুকরোগুলো বের করা সম্ভব হয়নি। একটি কুচক্রী মহলের স্বার্থসিদ্ধি না হওয়ায় তারা বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন ভূঞা বলেন, ‘সেতুতে রডের সঙ্গে কোনও ধরনের বাঁশ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কাজ করার সময় বন্যা ছিল। বন্যার সময় কাজ করতে দুই পাশের শাটার আটকানোর জন্য কিছু বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিল। বন্যার কারণে সে বাঁশের টুকরাগুলো বের করা সম্ভব হয়নি। সেতু নির্মাণে কোনও বাঁশ ব্যবহার করা হয়নি, রডই ব্যবহার করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল হক বলেন, ‘কোনও সেতু বা কালভার্ট নির্মাণে বাঁশ ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারও কাছ থেকে এধরনের কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com